img

কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ব্রেক্সিট বিল পাশ: রানির সম্মতির আনুষ্ঠানিকতা বাকি

প্রকাশিত :  ০৭:১০, ২৪ জানুয়ারী ২০২০

কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ব্রেক্সিট বিল পাশ: রানির সম্মতির আনুষ্ঠানিকতা বাকি

জনমত ডেস্ক: অবশেষে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট বিল। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পাশ হয়। এখন কেবল রানির সম্মতির আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। রানির সম্মতির মাধ্যমে বিলটি আইনে পরিণত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ ব্রেক্সিট নামে পরিচিত।

ব্রেক্সিট বিল নামে পরিচিত এই বিলের আনুষ্ঠানিক নাম ‘ইইউ উইথড্রোয়াল বিল’। বিলটি পার্লামেন্টের বাধা পার হওয়ার মধ্য দিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছাল। এই বিল পাশের মাধ্যমে বিচ্ছেদ কার্যকরে ইইউর সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে চুক্তি সম্পাদন করেছেন, সেটিও পার্লামেন্টের অনুমোদন পাচ্ছে।

২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত এক গণভোটে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেয়। ইইউর অধীনতা থেকে বেরিয়ে আসার এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাজ্যের স্বাধীনতা অর্জন হিসেবে দেখছেন বিচ্ছেদপন্থীরা। কিন্তু সংসদে ব্রেক্সিট বিলের বিরোধিতার কারণে এই বিচ্ছেদ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। গত ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্রেক্সিটপন্থী কনজারভেটিভ দল বড় ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পর ব্রেক্সিট কার্যকরের অনিশ্চয়তা দূর হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিল পাশের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘একটা সময় মনে হয়েছিল কখনো হয়তো ব্রেক্সিট বিল পাশ করা সম্ভব হবে না। আমরা সেই মাহেন্দ্রক্ষণ পাড়ি দিয়েছি। তিনি ইইউর অধীনতাবিহীন যুক্তরাজ্যের সমুদয় সামর্থ্য কাজে লাগানোর বলিষ্ঠ ঘোষণা দেন।’

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স কোনো সংশোধনী ছাড়াই ব্রেক্সিট বিল পাশ করেছিল। কিন্তু উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস বিলটি পাঁচটি সংশোধনী যুক্ত করার প্রস্তাব করে বিলটি হাউস অব কমন্সে ফেরত পাঠায়। কিন্তু গতকাল বুধবার হাউস অব কমন্স ওই সব সংশোধনী প্রস্তাব নাকচ করে বিলটি আবারও উচ্চকক্ষে পাঠায়। হাউস অব লর্ডসের অনেক সদস্য এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় নিম্ন কক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো বিরোধে না যাওয়ার পথ বেছে নেয়। কোনো সংশোধনী ছাড়াই হাউস অব লর্ডস বিলটি পাশ করে।

ব্রেক্সিট বিল অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিদ্যমান বাণিজ্য ও অন্যান্য সম্পর্ক বজায় থাকবে। কিন্তু এই ১১ মাস যুক্তরাজ্য ইইউর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। এ সময় উভয় পক্ষ ভবিষ্যৎ বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে একটি চুক্তি সম্পাদনে কাজ করবে। যুক্তরাজ্যে বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং ইইউ নেতারা এতে আনুষ্ঠানিক সাক্ষর করবেন। ইইউ পার্লামেন্টে বিলটি পাশে ২৯ জানুয়ারি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রেক্সিট এর আরও খবর

img

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি স্টেলার আহ্বান

প্রকাশিত :  ০৭:৩১, ০৭ জানুয়ারী ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লন্ডনের আদালতে উইকিলিকস-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তার জীবনসঙ্গী স্টেলা মরিস। বুধবার (৬ জানুয়ারি) অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১৯ সালের এপ্রিলে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। ওইদিনই তাকে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেন ব্রিটিশ আদালত। এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কম্পিউটার হ্যাক ও গুপ্তচর আইন লঙ্ঘনসহ ১৮টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। সোমবার (৪ জানুয়ারি) লন্ডনের একটি আদালতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণসংক্রান্ত মামলার রায় দেওয়া হয়। বলা হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই সপ্তাহের মধ্যে আইনি যুক্তি উপস্থাপনের কথা জানিয়েছে তারা।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেন তার জীবনসঙ্গী স্টেলা মরিস। জামিন খারিজ হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি প্রচণ্ড হতাশার। জুলিয়ানের বেলমার্শ কারাগারে থাকা ঠিক হবে না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আমি আইন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকেও আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা জুলিয়ানকে ক্ষমা করে দেয়।’

এর আগে গত এপ্রিলেও অ্যাসাঞ্জের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন স্টেলা মরিস। জামিন আবেদনের সঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে কীভাবে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছিল তাও প্রকাশ করেছিলেন এ আইন গবেষক। মরিস জানান, অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে তার দেখা হয় ২০১১ সালে। তখন তাকে সুইডিশ আইন তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে বলা হয়েছিল। মরিস বিবৃতিতে লিখেছিলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জুলিয়ান ও আমার মধ্যে ভালো রকমের বুদ্ধিভিত্তিক ও আবেগী বন্ধন গড়ে ওঠে। আমরা একে অপরের সেরা বন্ধুতে পরিণত হই।’

প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বন্ধুত্ব জোরালো হতে থাকে উল্লেখ করে মরিস জানান, তাদের দুই জনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে ২০১৫ সাল থেকে। লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে থাকার সময় তাদের দুটি সন্তানও হয়। তাদের একজনের নাম গ্যাব্রিয়েল, অপরজনের নাম ম্যাক্স। অ্যাসাঞ্জ যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা থেকে সন্তানদের আড়াল রাখতে চেয়েছিলেন বলে তখন জানান এ আইন বিশেষজ্ঞ।

ব্রেক্সিট এর আরও খবর