img

দ্বিতীয়দিনে জমজমাট অমর একুশে বইমেলা

প্রকাশিত :  ০৬:০৮, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দ্বিতীয়দিনে জমজমাট অমর একুশে বইমেলা

অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিনেই ঢল নেমেছে পাঠক ও দর্শনার্থীর। মেলার বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দুই অংশই মুখর হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের পদচারণায়।

মেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে দেখা যায় স্টলে স্টলে ডিজাইনের বৈচিত্র্য। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ।

চলতে ফিরতে দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য পাঠকরাও। প্রতিটি স্টলের মাঝে রয়েছে চলাফেরার প্রশস্ত পথ। তবে স্টল বিন্যাসে সাজসজ্জায় নতুনত্ব থাকলেও শনিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ধূলি-বালির উৎপাত। মেলার চারপাশে মাস্ক পরে ঘুরতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ধূলি-বালির উৎপাতকে উপেক্ষা করে পাঠকদের বইয়ের প্রতি আগ্রহের কোনো কমতি ছিলো না। স্টলে স্টলে গিয়ে পাঠকরা নেড়েচেড়ে দেখছেন বই। অনেকে খোঁজ করছেন প্রিয় লেখকটির বই এসেছে কি-না! এছাড়া একাডেমির নিজস্ব প্যাভিলিয়ন ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে-মেলা শুরুর আগেই স্টল তৈরির বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও মেলার দ্বিতীয় দিনেও বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা তাদের স্টল চালু করতে পারেনি।  

নতুন বইয়ের সুবাসিত ঘ্রাণের দেখা মেলেনি বেশকিছু প্রকাশনা সংস্থার স্টলে। সেই সঙ্গে মেলার বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়, স্টলের নির্মাণ সামগ্রীর অবশিষ্টাংশ। এখনও চলছে স্টলগুলো সাজিয়ে তোলার কাজ।

সহপাঠীদের নিয়ে মেলায় এসেছেন শারমিন নীলা। তিনি জনমতকে বলেন, মেলার শুরুতেই বই কিনবো বলে এসেছি। কারণ শেষের দিকে ভিড় বেড়ে যায়। এখন প্রতিটা স্টল ঘুরে ঘুরে দেখে বই কিনতে পারবো। আমরা কয়েক বন্ধু আসছি। আরও কয়েক দিন আসবো। মেলাতে বই কিনলে একটা সুবিধা হলো লেখকের অটোগ্রাফ নেওয়া যায়। তবে মেলাতে আসার পর সমস্যা হচ্ছে এখানে প্রচুর ধুলা; মাস্ক ছাড়া হাঁটা যায় না। তারপরও বইমেলাতে না আসলে মন ভরে না।

প্রকাশনা সংস্থা আদি’র প্যাভিলিয়নের সামনে এর ব্যাবস্থাপক বিপ্লব খান জানান, মেলার পরিধি গতবারের থেকে বাড়তি পাওয়ায় মেলা বেশ খোলামেলা পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এজন্য পাঠকরা বই দেখে কিনতে পারবে। স্টল বিন্যাস ও মেলার সার্বিক সাজ-সজ্জায় এসেছে নতুনত্ব। মেলা পাঠকের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সাজানো হয়েছে। ফলে ভিড়ের বিড়ম্বনা সহ্য করতে হবে পাঠকদের। আশা করছি, এবারের মেলা অনেক ভালো হবে।

এদিন গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের রবীন্দ্র চত্বরে অবস্থিত মেলার মূলমঞ্চে ‘বিজয়: ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক-গবেষক আবুল মোমেন।  

আলোচনায় অংশ নেন লেখক-সাংবাদিক হারুন হাবীব, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী এবং গবেষক মোফাকখারুল ইকবাল। শুক্রবার (০১ ফেব্রুয়ারি) মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

img

আজ পর্দা নামছে একুশে বইমেলার

প্রকাশিত :  ০৪:৪৩, ০২ মার্চ ২০২৪

আজ শনিবার (২ মার্চ) পর্দা নামছে অমর একুশে বইমেলার। তবে যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল সে অনুযায়ী বই বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের ভাষ্য— বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা পাঠকদের আলোড়িত করেছে। এ অবস্থায় মেলা শেষ হওয়ার আগের দিন শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও ভিড় ও বিক্রি ছিল কম।

আবার অনেকে বলছেন, মেলার সময় বাড়ানোর তথ্যটা যে পরিমাণে প্রচার হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তাই অনেকে জানেনই না যে মেলার সময় বেড়েছে।

সাধারণত বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা এক দিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেওয়ার। তাদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে বইমেলার সময় দুদিন বাড়ানো হয়।

এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।

এছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচা-বিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।

এদিকে মেলার শেষ সময়েও নতুন বই নিয়ে আসছেন প্রকাশকরা। শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিনেও নতুন বই এসেছে ২১৯টি। শুক্রবার হওয়ায় এদিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় আর শেষ হয় রাত ৯টায়। তবে এদিন ছিল না কোনো শিশুপ্রহর। শনিবারও থাকবে না কোনো শিশুপ্রহর।

মেলার শুরু থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থেকেছে আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন। বর্ধিত দুই দিনে তা-ও থাকছে না। এই সময়টাতে মূলত বই বিক্রিই মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের।

শনিবার সমাপনী দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।