গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী–দেবর পলাতক
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গোলনাহারের নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে গোলনাহারের স্বামী ও দেবরসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার (৪ মে) বিকেলে নিহত গৃহবধূর মা আড়াইহাজার থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (৩ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রদী পূর্বপাড়া গ্রামে গৃহবধূ গোলনাহার আক্তারকে (২৫) শ্বশুর বাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আট বছর আগে রামচন্দ্রদী পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম মিয়ার মেয়ে গোলনাহারের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রিপন মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য দুই পরিবারের মধ্যে মনমালিন্য চলছিল। প্রায়ই শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য গোলনাহারের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত। দুই মেয়ে জন্মানোর পরও স্বামী রিপন মিয়া ও দেবর আরিফ নানা অজুহাতে তার ওপর নির্যাতন চালাতেই থাকেন।
গত শুক্রবার রাতে বাড়িতে মুরগির মাংস রান্না ভালো হয়নি এ অজুহাতে স্বামী ও দেবর গোলনাহারের চুলের মুঠি ধরে লাঠি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখতে থাকে। এক পর্যায়ে গোলনাহার অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রতিবেশিরা তার স্বজনদের খবর দেয়। স্বজনরা শুক্রবার মধ্যরাতে এসে গোলনাহারের নিথর দেহ উদ্ধার করে দ্রুত আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আনন্দ কুমার দত্ত জানান, হাসপাতালে আনার আগেই গোলনাহার মারা যান। শারীরিক আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন তিনি।
ওসি আহসান উল্লাহ জানান, লাশ উদ্ধার করে শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যপারে নিহত গৃহবধূর মা রসুমা বেগম আটজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নেমেছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা যায়নি। নিহত গৃহবধূর স্বামী ও দেবরসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক রয়েছে।