img

ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলছে, তা অপরাজনীতির নামান্তর: বুয়েট অ্যালামনাই

প্রকাশিত :  ১১:১৯, ০৭ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলছে, তা অপরাজনীতির নামান্তর: বুয়েট অ্যালামনাই

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন বুয়েট অ্যালামনাই। তারা বলেছে, বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে বুয়েটের উন্নতি হচ্ছে। বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে, যদি এখানে একটি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে। বুয়েট অ্যালামনাই সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর।

বুধবার বুয়েট অ্যালামনাই বোর্ড অব ট্রাস্টি ও বুয়েট আবাসিক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের সঙ্গে বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সভাপতি আইনুন নিশাতের নেতৃত্বে যৌথ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সভার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বুয়েটে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট ও অনিশ্চয়তার বিষয়ে এ সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতিসহ বুয়েটের সামগ্রিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক এবং শিক্ষার মান অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারেও আলোচনা শেষে কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সিদ্ধান্তগুলো হলো—প্রথমত, বুয়েট অ্যালামনাই মনে করে যে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পূর্ণ দায়িত্ব উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের।

দ্বিতীয়ত, কদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মতপ্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর।

তৃতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষার মান সমুন্নত রাখার জন্য বুয়েট অ্যালামনাইদের ভূমিকা অনস্বীকার্য ও এই উদ্দেশ্যে তারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।

চতুর্থত, গত পাঁচ বছরে বুয়েটের শিক্ষা-কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়নি, সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণার ক্ষেত্রে সম্মানজনক অর্জন ও স্বীকৃতির ক্রমোন্নতি এই ধারাবাহিক সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়। এই পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া কারোরই কাম্য হতে পারে না।

ভবিষ্যতেও বুয়েটের এই সংকল্প ও অভিলাষ লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে আরও বেগবান হোক, বুয়েট অ্যালামনাই এই সভার মাধ্যমে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করতে চায়।

পঞ্চমত, বুয়েট শিক্ষা ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। ক্রমাগতভাবে বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি সাধন করে চলেছে। ক্রমাগত প্রচেষ্টা এবং একটি অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে বুয়েট তার বৈশ্বিক খ্যাতি আরও বাড়াতে এবং বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে, যদি এখানে একটি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে।

ষষ্ঠত, বুয়েটের স্নাতকেরা দেশে-বিদেশে কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, নতুন বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দরসহ অসংখ্য বৃহৎ প্রকল্পে তারা পেশাদার সহায়তার মাধ্যমে দেশের অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে রেখেও প্রতিষ্ঠানটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ গড়ে তোলার কারণে একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

সপ্তমত, বুয়েট ঐতিহাসিকভাবে অতি উচ্চ মানের কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রমাণিত ও স্বীকৃত।

বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্বাস করে এই প্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদ লালন করার ক্ষেত্র নয়। এ বিষয়ে ন্যূনতম আভাস বা আশঙ্কা দেখা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকার নিশ্চয়ই কঠোর হস্তে তা দমন করবে।

অষ্টমত, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে নিরাপত্তাহীনতার কথা বারবার প্রকাশ করছে, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনার জন্য বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে।

নবমত, বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্বাস করে যে সাম্প্রতিক এই সংকট দ্রুত নিরসন হবে। অতীতের মতো আগামীতেও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, প্রশাসন ও শিক্ষকদের পারস্পরিক সম্মান, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সদা জাগ্রত থাকবে এবং সংশ্লিষ্ট সবাই এই বিদ্যাপীঠের গৌরব ও সুনাম সমুন্নত রাখার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে।


শিক্ষা এর আরও খবর

img

প্রয়োজনে শুক্রবারও স্কুল খোলা রাখা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত :  ১২:১৬, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কারিকুলামের নির্দিষ্ট দিনগুলো সম্পন্ন করতে প্রয়োজনে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শ্রুক্রবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে—বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল ইসলাম চৌধুরী নওফেল। 

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের তাপমাত্রা একেক রকম। এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও হাওড় এলাকার তাপমাত্রা কম। তবে অতি বৃষ্টিতে কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে বন্যার কারণে পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ছুটির কারণে লার্নিং গ্যাপ কমাতে প্রয়োজনে ছুটির দিন শুক্রবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না বন্ধ থাকবে এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আদেশের কপি পেয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে আদেশ জানানো হবে। তবে আমরা আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আর এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগ বিভিন্ন এলাকার পাঠদান বিষয়ে আবহাওয়া দফতর এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দেশনা দিয়ে আসছে। তবে স্বতঃপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত এলে আমাদের কাজের ব্যঘাত ঘটে।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ছুটি, কারিকুলাম, টেক্সটবুক এসব সব বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার আলোকে সিদ্ধান্ত হয়। রাজধানীকেন্দ্রিক প্রভাবশালী মানুষের আর সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা দেখে রাষ্ট্রপরিচালনা হয় না।

রাজধানীর পরিস্থিতি অন্য জেলার সঙ্গে এক নয়। তাই ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এ কারণেই সুনির্দিষ্ট কিছু জেলায় পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখেই স্কুল বন্ধের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।