উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না আ.লীগের এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা এবং নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে এবং নির্বাচন যেন বিতর্কিত না হয় এজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নির্দেশনা অমান্য করে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে ও মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পক্ষ নিলে দলের পক্ষ থেকে বিশেষ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের যেসব এমপি, মন্ত্রীর ছেলেমেয়ে ও আত্মীয়-স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে এবং নজর রাখছেন দলীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নানান বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক হয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে। সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন ও আফজাল হোসেন এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিতি থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নানান বিষয় নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কয়েকজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের জন্য স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তাদের কোনো আত্মীয়-স্বজন ও ছেলেমেয়েরা অংশ নিতে পারবে না। যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয় এবং এমপি, মন্ত্রী তাদের পক্ষে সমর্থন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে দল।
দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতাদের অভিমত ছিল- প্রতীক বরাদ্দের কারণে দলের তৃণমূলে গ্রুপিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে প্রতীক বাদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে দলের প্রভাবশালী নেতারা, বিশেষ করে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীরা স্ব স্ব নির্বাচনি এলাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। এ কারণে দলের তৃণমূলে কমান্ড ভেঙে পড়েছে। তারা যেহেতু এমপি, মন্ত্রী তাই প্রশাসনের ওপর খবরদারি করার সুযোগ আছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবেন না। এ বিষয়ে নেত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি সে অনুযায়ী বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
সূত্র বলছে, এমপি-মন্ত্রীরা স্থানীয় নির্বাচনে খবরদারি করছেন। আধিপত্য বিস্তার ও ‘মাই ম্যান’ সৃষ্টির জন্য চেষ্টা করছেন। এমপি-মন্ত্রীরা নিজের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য যে রাজনীতি করছেন আওয়ামী লীগ তা পছন্দ করছে না। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্যই ইতোমধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে ভারসাম্য রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হোক, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এমপি-মন্ত্রীর দূরুত্ব সৃষ্টি হোক সেটা চায় না। যারা নিকটাত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।