img

নতুন নির্বাচন ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসরায়েলে বিক্ষোভ

প্রকাশিত :  ০৫:৩৫, ২১ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৫:৪০, ২১ এপ্রিল ২০২৪

নতুন নির্বাচন ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসরায়েলে বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাওয়া  ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক থাকা  বন্দিদের  উদ্ধার করাসহ  নতুন নির্বাচন আয়োজন ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ইসরায়েলে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।

রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে সর্বশেষ দফা বিক্ষোভে নতুন নির্বাচনের দাবিতে এবং গাজায় আটক বন্দিদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও পদক্ষেপের দাবিতে শনিবার রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী।

গাজায় প্রায় সাত মাস ধরে ইসরায়েল আগ্রাসন চালাচ্ছে এবং হামাসের হাতে এখনও বন্দি থাকা ১৩৩ ইসরায়েলি বন্দির বিষয়ে নেতানিয়াহু সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মধ্যে ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

জরিপগুলোতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, বেশিরভাগ ইসরায়েলি নাগরিক তাদের দেশে নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুকে দায়ী করছেন। তবে ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী বারবার আগাম নির্বাচনের কথা অস্বীকার করেছেন।

জনমত জরিপগুলো বলা হচ্ছে- এখন ইসরায়েলে নির্বাচন হলে তাতে নেতানিয়াহু হেরে যাবেন। আর তাই নেতানিয়াহুর দাবি, যুদ্ধের মাঝখানে নির্বাচনে যাওয়া কেবল হামাসকেই পুরস্কৃত করবে।


রয়টার্স বলছে, শনিবার তেল আবিবে বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন ইয়ালন পিকম্যান নামে ৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এসেছি, তারা আমাদেরকে মাসের পর মাস নিচে টেনে নিয়ে যাচ্ছে; ৭ অক্টোবরের আগেও এবং ৭ অক্টোবরের পরেও। আমরা নিচে নেমেই চলেছি।’

ইসরায়েলি মিডিয়া ২৪০ থেকে ২৫৩ ইসরায়েলি বন্দির গাজায় আটক থাকার কথা বলে থাকে। যার মধ্যে তিনজনকে ইসরায়েল মুক্ত করেছিল এবং ১০৫ জনকে হামাস গত বছরের নভেম্বরে বন্দি বিনিময় চুক্তির সময় মুক্তি দিয়েছিল। এছাড়া ইসরায়েলি হামলার কারণে আরও ৭০ জন বন্দির নিহত হওয়ার কথা বলে থাকে হামাস।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

আরও পড়ুন: 

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত

আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে জরুরি বৈঠক নেতানিয়াহুর

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।

ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপকভাবে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। এর ফলে এই ভূখণ্ডের জনগোষ্ঠী বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ।

এছাড়া ইসরায়েল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

গত জানুয়ারিতে এই আদালতের দেওয়া এক অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

তবে এরপরও নেতানিয়াহু গাজায় ইসরায়েলি অভিযান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সমস্ত বন্দিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা এবং হামাসকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

img

ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করবে তুরস্ক: এরদোগান

প্রকাশিত :  ১৪:০২, ০৪ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:০৫, ০৪ মে ২০২৪

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান জানিয়েছেন, ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য স্থগিত করার মূল লক্ষ্য হলো গাজায় ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা।

শুক্রবার ইস্তানবুলে একটি জাতীয় ব্যবসায়িক কমিটির আলোচনার সময় তিনি এ কথা বলেন। খবর আনাদোলুর।

এরদোগান বলেন, আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো— ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ও নেতানিয়াহু সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা, যেটি পশ্চিমাদের নিঃশর্ত সমর্থনের কারণে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

নেতানিয়াহুর সরকারকে সমর্থন করার জন্য আবারও পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে এরদোগান বলেন, তিনি আশা করেছিলেন যে, এই দেশগুলো তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তুর্কিকে ‘আক্রমণ’ করবে।

তিনি বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে আমাদের বাণিজ্য বিধিনিষেধের কারণে পশ্চিমারা কীভাবে আমাদের আক্রমণ করবে তা আমরা ভালোভাবে জানি। তুরস্কসহ অন্যান্য দেশের জন্য এটি একটি উদাহরণ সৃষ্টি করবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, যখন একটি যুদ্ধবিরতি হয়, তখন গাজায় পর্যাপ্ত সাহায্যের অনুমতি দেওয়া হয়। এটি আমাদের লক্ষ্য।

এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের অঞ্চলের কোনো দেশের সঙ্গে শত্রুতা বা সংঘাতের দিকে অগ্রসর হই না। আমরা আমাদের ভূগোলে সংঘর্ষ, রক্ত ও অশ্রু দেখতে চাই না।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্ক। তারা বলেন, ইসরাইল থেকে তুরস্কে আর কোনো পণ্য আসছে না এবং যাচ্ছেও না।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে এ তথ্য জানিয়েছেন তুরস্কের দুই কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বিরুদ্ধে এক্সে একটি পোস্ট করেছেন। এতে তিনি অভিযোগ করেছেন, বন্দর দিয়ে ইসরাইলি পণ্য আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করে দিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বাণিজ্যিক চুক্তি ভঙ্গ করছেন।

তিনি এক্সে লিখেছেন— স্বৈরশাসক এমন ব্যবহার করে থাকে। তুরস্কের মানুষ ও বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিকে উপেক্ষা করেছেন তিনি।