img

ভালো কাজ দেয়ার আশ্বাসে ২ মাস ধর্ষণ: সিলেটের সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বহিস্কার

প্রকাশিত :  ০৫:৩০, ০২ এপ্রিল ২০২৪

ভালো কাজ দেয়ার আশ্বাসে ২ মাস ধর্ষণ: সিলেটের সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বহিস্কার

সিলেটে ভালো কাজ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে এক তরুণীকে দুই মাস আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় ১১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুস সালামকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনের মহানগর কমিটি।

রোববার (৩১ মার্চ) সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠুর স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় সিলেট মহানগরের অন্তর্ভুক্ত ১১নং ওয়ার্ড সভাপতি আবদুস সালামকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আবদুস সালামের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও নগরের লালদীঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা আবদুস সালাম (৪০); একই এলাকার আবদুল মনাফ (৩৮) এবং রেখা বেগম (৩০) নামের এক নারী। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী তরুণী নগরের শেখঘাটের একটি কারখানায় কাজ করতেন এবং শহরের একটি এলাকায় বসবাস করতেন। অভিযুক্ত রেখা বেগম তার প্রতিবেশী। ভুক্তভোগীকে শহরের বাসায় রেখে গ্রামে বেড়াতে যান স্বজনেরা। এ সময় ওই তরুণীকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুস সালামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন রেখা। ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘সালাম নেতা টাইপের লোক, বিপদে-আপদে উপকারে আসবে।’ গত ৭ জানুয়ারি রেখার মাধ্যমে তরুণীকে নিজের বাসায় নিয়ে যান সালাম। এরপর টানা ২২ দিন সালাম তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন।

এজাহারে বলা হয়, এর মধ্যে ওই তরুণীর মা-বাবা গ্রাম থেকে শহরে ফিরে আসেন। বাসায় মেয়েকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যেতে চাইলে প্রতিবেশী রেখা বেগম তাদের সালামের কাছে নিয়ে যান। সালাম তাদের জিডি করতে নিষেধ করে নিজেই খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর দু-তিন দিন পর তরুণীর মা-বাবা আবার সালামের কাছে গেলে তিনি বিকেলের দিকে ফিরিয়ে আনার কথা জানান। ওই দিন বিকেলে তরুণীকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিয়ে সালাম জানান, তরুণী এক প্রবাসীর বাসায় কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই উদ্ধার করেছেন। স্বজনেরা প্রবাসীর নাম জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে তরুণী মা-বাবাকে ধর্ষণের ঘটনাটি জানালে সালাম তাদের হত্যার হুমকি দেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন।

এজাহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার তিন দিন পর আবার কাজে যাচ্ছিলেন তরুণী। তখন সালাম বিয়ে ও ভালো জায়গায় কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বাসা থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন। কথামতো সালামের সঙ্গে আবার দেখা করেন ওই তরুণী। তিনি তরুণীকে কিছু টাকা দিয়ে নগরের কাজীরবাজার এলাকায় এক বন্ধুর বাসায় পাঠান। সেখান থেকে অভিযুক্ত মনাফ তাকে হবিগঞ্জের বাহুবলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যান।

সেখানে আটকে রেখে সালাম-মনাফসহ একাধিক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী কৌশলে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় সিলেটে পালিয়ে আসেন। স্বজনেরা তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে তরুণীর মা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

শ্রীমঙ্গলে সংবাদ সম্মেলন

img

শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জোরপূর্বক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত :  ১২:৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পারিবারিক সম্পত্তি জোরপূর্বকভাবে দখলের অভিযোগ এনে তিন ভাই বাবুল দোষাদ, গোপাল দোষাদ ও বকুল দোষাদ একত্রে মিলে শ্রীমঙ্গল শহরে এক  হোটেল পানসিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

গত  ২৮ শে এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে পূর্বাশা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা বাবুল দোষাদ অভিযোগ করে বলেন যে প্রায় ৩৫ বছর পূর্বে তারা একত্রিতভাবে শ্রীমঙ্গল শহরের জালালিয়া রোডে নিজ মৌরসী সম্পত্তিতে খুব সন্দর ও মিলেমিশে বসবাস করে আসছিলেন। হঠ্যাৎ একদিন তাঁর কাকা শ্রীনাথ দোষাদ ও বৈমাত্রেয় ভাই বাদল দোষাদ তাঁর পিতা মাতা ও ভাই-বোনসহ সবাইকে জোরপূর্বকভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তখন তারা ভাই বোন সবাই ছোট ছিলেন। অনন্যোপায় হয়ে তারা তাদের মামা শহরের পূর্বাশা নিবাসী গঙ্গা বাহাদুরের বাসায় আশ্রয় নেন। তখন থেকে তারা পারিবারিকভাবে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্বাশা আবাসিক এলাকায় বসবাস করে আসছেন ।

২০০৪ সালে তাদের পিতা গনেশ দোষাদ শ্রীমঙ্গল পৌর চেয়ারম্যান বরাবর পৈত্রিক সম্পত্তি বাটোয়ারানামা করার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। জালালিয়া রোডস্থ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সাবেক কাউন্সিলর (ঝিনু মিয়া) অবগত আছেন। 

পারিবারিকভাবে তাদের পিতা এবং পিতার ভাতৃগণ মিলিয়ে ০৫ ভাই (১) পিতা: মৃত গনেশ দোষাদ, (২) মৃত রামা দোষাদ (কাকা), (৩) মৃত হরি দোষাদ (৪) মৃত বিশ্বনাথ দোষাদ (কাকা) (৫) শ্রীনাথ দোষাদ (কাকা)। পারিবারিকভাবে দাদা হইতে প্রাপ্ত মৌরসী সম্পদ যার মৌজা: রূপসপুর, জে,এল, নং-৬৭, খতিয়ান নং-৭২৮, উপজেলা: শ্রীমঙ্গল, জেলা: মৌলভীবাজার, দাগ নং- ৮০৮০/৮০৮১/৮০৮২। ১৭/১১/২০০১ ইং সালের সেটেলম্যান্ট জরিপ অনুযায়ী মোট ৫২.২৫ ভূমি মধ্যে তাদের পিতা ১০.৪৫ ভূমি প্রাপ্ত হন। কিন্তু তাদের দাদা হইতে প্রাপ্ত উক্ত মৌরসী সম্পত্তি তাদের পিতা গনেশ দোষাদ এর মৃত্যুর পূর্বে ২০১৭ সালে সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁর জীবন দশায় উনার সম্পূর্ণ জায়গা ভিটা তাঁর ৪ ছেলের নামে বন্টন করে দেয়ার। সে মোতাবেক তাঁর বড় সন্তান বাদল দোষাদের সাথে যোগাযোগ করলে কোন সাড়া পাননি ও পিতার সাথে অশালীন ব্যবহার করে নানাভাবে হুমকি দেন বলে মৃত গণের জুসার এর ছেলে বাবুল তুষার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন । এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে তাঁর পিতা সম্পূর্ণ জায়গার তাঁর সম্পত্তি হতে প্রাপ্ত সম্পত্তি চৌহদ্দা হিসেবে ৭.৮৩ শতক ভূমি দানপত্র দলিল সূত্রে তাঁর তিন ছেলের নামে দলিলপত্র করে দেন। যার খতিয়ান নং-৩২২৫, হোল্ডিং নং-৩৪২৯, জে,এল, নং-৬৭, মৌজা: রূপসপুর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার বলে বাবুল দোষাদ উল্লেখ করেন।

বিগত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে তাদের পিতা মৃত্যুবরণ করেন। এর কিছুদিন পরেই তাদের বৈমাত্রেয় ভাই বাদল দোষাদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত ও তাদের কাকা শ্রীনাথ দোষাদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক ভাবে তাদের জমির উপর বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে জবর দখল করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন । 

বাবুল দোষাদসহ তাঁর অপর দুই ভ্রাতা অভিযোগ করে বলেন যে বাদল দোষাদ ও মিতালী দত্ত সোস্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে তারা নাকি দাদী (ঠাকুরমা) ও কাকার জায়গার উপর বসবাস করছেন। কিন্তু তাদের কাকা তাঁর প্রাপ্ত জায়গার এক তৃতীয়াংশ ভূমি মন্টু মাষ্টারের নিকট বিক্রয় করেন। যা সরজমিনে তদন্ত হলে ঘটনার সততা প্রমান মিলবে বলে সাংবাদিকদের জানান। বর্তমানে ঐ বিক্রয়কৃত ভূমিতে ৩য় তলা ফাউন্ডেশনের একটি ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে  জানান। 

বৈমাত্রেয় ভাই বাদল দোষাদ এবং মিতালী দত্ত এর নিকট আবেদন করলেও তিনি উনাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করেন। উক্ত সম্পদ দখল করে  তিনিসহ তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন, গালিগালাজ ও হত্যা করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।  ফলে বাধ্য হয়ে তিনি শ্রীমঙ্গল থানায়  বিগত ০২ এপ্রিল ২০২৪  শ্রীনাথ দোষাদ, বাদল দোষাদ চৌধুরী এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে জবরদখলকারীগণ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদেরকে  হয়রানিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। এমতাবস্থায়

 পৈতৃক সম্পত্তি উদ্ধার ও জানমাল রক্ষার জন্য শ্রীমঙ্গল প্রশাসন, সাংবাদিক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত তার ফেসবুক একাউন্টে এক পোস্টে  তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে অভিহিত করেন।