img

প্রবাসী পরিবারের ভূসম্পত্তি দখলে একদল দুর্বৃত্তের পাঁয়তারা

প্রকাশিত :  ১৯:৩২, ০২ এপ্রিল ২০২৪

প্রবাসী পরিবারের ভূসম্পত্তি দখলে একদল দুর্বৃত্তের পাঁয়তারা

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট শহরে প্রবাসী পরিবারের ভূসম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহরে প্রবাসীর ক্রয় করা জমিতে জবর দখল করার চেষ্টা করছে একদল চাঁদাবাজ দুর্বৃত্ত। ভুক্তভোগী প্রবাসী মোঃ আলমগীর মান্নান জানিয়েছেন, চাঁদাবাজ লোকজনকে তারা ভয় পাচ্ছেন এবং জমিজমা আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করছে তারা।

নিউইয়র্ক প্রবাসী মোঃ আলমগীর মন্নান এক আবেদনে বলেছেন,আমি গত ২০১৭ সালে দেশে আমার শ্বশুরের মাধ্যমে সিলেট মহানগরীর পশ্চিম পীর মহল্লায় ৪৫২৬/২০১৭ নং দলিল মূলে ১ খণ্ড জমি ক্রয় করি। বর্ণিত জমিতে ঘর নির্মাণ করে একজন কেয়ার টেকারকে জমিজমা দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলাম।

আলমগীর মান্নান জানান, নভেম্বর ২০২০ সালে একদল সন্ত্রাসী রাতের বেলায় এসে কেয়ারটেকারকে ভয়ভীতি দেখায় এবং জমিতে ঘরসহ অন্যান্য নির্মাণ স্থাপনার কারণে চাঁদা দাবি করে ও হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি আমার শ্বশুর জানতে পেরে পরদিন এলাকার মুরব্বিগন ও ৭ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলকে অবগত করেন। কাউন্সিলর এ ব্যাপারে আর কোন অসুবিধা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন।\"

সাংবাদিকদের কাছে দেয়া বক্তব্যে মোঃ আলমগীর মান্নান জানান, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে তার শ্বশুর ২০২১ সালে আমেরিকায় চলে আসেন। এখানে আসার পর তিনি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ও নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার কারণে প্রবাসে অবস্থান করেন। সে সময়টিতে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে জিয়া মিয়া নামক একজন কেয়ারটেকারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।

জমিজমা রক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে তার শ্বশুর অসুস্থ অবস্থায় ২০২২ সালের অক্টোবরে দেশে চলে যান। দেশে গিয়ে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে আবারো এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ এর এক পর্যায়ে কাউন্সিলর বিষয়টি নিয়ে কোন ঝামেলা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন। এমন আশ্বাস পেয়ে প্রবাসী শ্বশুরও দেশত্যাগ করেন।

মোঃ আলমগীর মন্নান জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২২ আগস্ট রাতে এসব সন্ত্রাসীরা জিয়ার নেতৃত্বে এসে তার ঘরদোয়ার ভেঙ্গে ফেলে। এসব শুনে কাউন্সিলরকে ফোনে অবগত করলে তিনি ক্ষতিপূরণসহ বিচার করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

আলমগীর মান্নান জানিয়েছেন, আত্মীয় স্বজনরা ২০২১ সাল থেকে কাউন্সিলর অফিসে ধরনা দিয়েও কোন সুফল পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। সন্ত্রাসীরা এই সময়ের মধ্যে আলমগীর মান্নানের ক্রয় করা এবং ঘর নির্মাণের জন্য রাখা পাঁচ হাজার ইট ও চারশ ফুট বালি পাশের প্লটে স্থানান্তর করে। এগুলো নেয়ার সুবিধার্থে সীমানার কাটা তারের বেড়া ও পিলার তুলে নেয়।

প্রবাসী আলমগীর মান্নান তার আবেদনের বিবরণে বলেছেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না, তাই এরা এসব অন্যায় বেআইনি জুলুম অব্যাহত রেখেছে। প্রতিকারের আশায় এসব ঘটনা কাউন্সিলরকে জানানো হয়েছে ও আইনের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর বিষয়টির বিস্তারিত জানিয়ে প্রবাসী আলমগীর মান্নানের শ্বশুর সিলেটের বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়রি (নং ১১৯১-২০) করেন। এ নিয়ে কোন আইনগত প্রতিকার পান নাই প্রবাসী ভুক্তভোগী পরিবারটি। নিরূপায় এ প্রবাসী  নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্সুলেটের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে প্রতিকারের আশায় আবেদন জানান। এ আবেদনটি বর্তমানে মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্তাধীন আছে বলে প্রবাসী মান্নান জানান।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের মদদে এমন কাজ হচ্ছে বলে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের সাথে সম্পর্কের জের ধরে প্রবাসীদের জমি দখলের একের পর এক চেষ্টা করে আসছে এসব দুর্বৃত্বরা। প্রবাসীরা স্বল্প সময়ের জন্য দেশে গিয়েও প্রতিকারের জন্য কিছু করতে পারছেন না।

গত পৌর কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় সশস্ত্র মহড়ার জন্য জেল খাটা সাবেক কাউন্সিলর তাঁর সন্ত্রাসী কাজকর্ম অব্যাহত রেখেছে এবং প্রবাসীদের জমিজমা আত্মসাৎ করার জন্য তার লোকজনদের নিয়ে জবরদখল করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ভুয়া দলিলপত্র করাসহ ভয়ভীতি এবং ক্ষমতাসীন লোকজনের নাম ব্যবহার করে এসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রবাসী আলগীর মান্নান নিরূপায় হয়ে সরকারের কাছে এ নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। এ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আরও কিছু প্রবাসী তাদের জমি দখলের অভিযোগ এনেছেন। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে প্রতিকার প্রার্থনার জন্য সংবাদ সম্মেলন করাসহ সরকারের বিভিন্ন মহলে আবেদন করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে প্রবাসীরা জানিয়েছেন। 

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ১০

প্রকাশিত :  ১৫:১৮, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

হবিগঞ্জে হারুন আহমেদ হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে আসামিদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মো. আজিজুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।  

মোট ৪৭ আসামির মধ্যে সাজার আদেশপ্রাপ্ত একজন পলাতক। সাজাপ্রাপ্ত বাকি ১৬ জনসহ ৩৮ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলা চলাকালে মারা গেছেন আটজন। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিরা খালাস পেয়েছেন।   

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হুরগাঁও গ্রামের রফিক মিয়া, আব্বাস উদ্দিন, জাকির হোসেন, ফজল মিয়া, রুহুল আমিন মিলন, জালাল মিয়া ও কুতুব উদ্দিন।

 যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-জজ মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া, ইছাক মিয়া, জিয়াউর রহমান, কালাম মিয়া, কুতুব উদ্দিন, আব্দুল মতলিব, মিজাজ মিয়া, আয়াত আলী ও সায়েদ আলী। তাদের মধ্যে আয়াত আলী পলাতক।

বিকেলে সাড়ে ৫টায় হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে ২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হুরগাঁও গ্রামে সামাজিক বিচারক ও এলাকার মুরুব্বি হারুণ মিয়াকে রাস্তায় পথরোধ করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত হারুন মিয়ার ভাই সুমন আহমেদ ৪৭ জনের নামে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ রায় দেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আদালতপাড়ায় সহস্রাধিক মানুষের ভিড় ছিল। পরে কঠোর নিরাপত্তায় আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।