img

এসি ছাড়াই ঘর ঠাণ্ডা রাখার ১১টি সহজ উপায়!

প্রকাশিত :  ১১:৪০, ২১ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৫২, ২১ এপ্রিল ২০২৪

এসি ছাড়াই ঘর ঠাণ্ডা রাখার ১১টি সহজ উপায়!

এসি কিনতে গিয়ে  জমানো টাকা না ভেঙে এই গরমে আপনার ঘরকে প্রাকৃতিকভাবে কীভাবে ঠান্ডা রাখতে হয় তার সমাধান খুঁজছেন?  আসুন জেনে নেই বিস্তারিত।


প্রতি বছর তাপমাত্রা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে গ্ৰীষ্মকালের এই অসহনীয় রোদ ও গরমকে টেক্বা দিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনে মানুষ যেন হাঁপিয়ে উঠছে। শহরে-গ্ৰামে অনেকেই গ্ৰীষ্মের এই তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ঘরে এসি লাগাচ্ছেন। কিন্তু এ তো শুধু গুটিকয়েক লোকের কথা, অধিকাংশের পক্ষে এসি কেনা ও এর খরচ বহন করা হাতি পোষার সমতুল্য। আর এসি থেকে নির্গত ফ্রেয়ন গ্যাসের পরিবেশগত ঝুঁকি তো আছেই। সেক্ষেত্রে এই গরমে এসি বা এয়ার কুলার ছাড়া ঘর ঠান্ডা করবেন কিভাবে?আপনি চাইলে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করে প্রাকৃতিকভাবেই ঘর ঠান্ডা রাখতেপারেন। গরমে আপনার ঘর ঠান্ডা রাখার সহজ কিছু উপায় চলুন দেখে নেয়া যাক।


১) টেবিল ফ্যানের সামনে বরফ রেখে দিন
টেবিল ফ্যানের সামনে একটি গামলায় আইস কিউব বা ফ্রিজের ঠান্ডা পানি রেখে ফ্যান ছেড়ে দিন। বরফ বা ঠান্ডা পানি এর আশেপাশে ঠান্ডা পরিবেশ তৈরি করবে এবং ফ্যানের বাতাস তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিবে। এর ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই  ঘরে শীতলতা ছড়িয়ে পড়বে। রাতে ভালো ঘুমের জন্য ঘুমানোর ঠিক আগে এই কাজটি করতে পারেন। সবথেকে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য তার আগে ঘরের দরজা জানালাগুলো বন্ধ করে দিন।


২) দুপুরে জানালা বন্ধ রাখুন অথবা উইন্ডো ব্লাইন্ড ফেলে দিন
দিনের বেলা জানালা দিয়েই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তাপ ঘরে প্রবেশ‌ করে। তাই দিনে সরাসরি সূর্যের তাপ আসে এরকম জানালা বন্ধ রাখুন। পশ্চিমমুখী জানালা থাকলে দুপুর‌ ১২ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জানালা বন্ধ রাখুন ও প্রয়োজনে উইন্ডো ব্লাইন্ড ব্যবহার করুন বা পর্দার উপর ভারী চাদর দিয়ে দিন।


৩)  ঘরে গাছ রাখুন
শুধু ঘর ঠান্ডা করতেই নয়, ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করতেও‌ ঘরে গাছ রাখা একটি কার্যকর উপায়। ঘরের ভেতর যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো আসেনা সেখানেও আপনি বিভিন্ন ইনডোর প্ল্যান্ট লাগাতে পারবেন। ঘর সংলগ্ন বারান্দা থাকলে ইনডোর, আউটডোর দুই ধরনেরই গাছই লাগাতে পারেন।
ঘরের ভেতর ঠান্ডা রাখার জন্য অ্যালোভেরা, স্নেক প্ল্যান্ট, বোস্টন ফার্ন, পথোস, ব্যাম্বু পাম, পিস লিলি, জারবেরা ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন।


৪) ঘরে ভারী পর্দা ব্যবহার করুন
ঘরের জন্য গাঢ় রঙের ভারী পর্দা বেছে নিন। এধরনের পর্দা সূর্যের তাপ ঘরের ভেতরে প্রবেশ করতে দিবেনা।
৫) মেঝেতে বিছানা করুন

অতিরিক্ত গরম পড়লে মেঝেতে শোয়ার অভ্যাস করতে পারেন। সিলিং থেকে দূরে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই বিছানার থেকে মেঝেতে কম গরম অনুভূত হয়। ঘুমানোর আগে মেঝে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুছে নিলে গরম অনেকটা কম লাগবে।


৬) ঘুমানোর আগে বেডশীট ফ্রীজে রাখুন
শুনতে আজব মনে হলেও এই গরমে একটু স্বস্তি দিতে এটি একটি কার্যকর উপায়। বিছানার চাদর একটি বড় জিপার প্লাস্টিক ব্যাগে করে নরমাল ফ্রিজে/ফ্রিজারে ১ ঘন্টা/৩০ মিনিট রেখে ঘুমানোর আগে বের করূন। আর বিছানার জন্য সবসময় সুতি চাদর নির্বাচন করুন। সুতি চাদরের মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে বলে এগুলো গরমে আরামদায়ক হয়।


৭) ঘরে কম আসবাবপত্র রাখুন
ঘরে বেশি আসবাবপত্র থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ঘরে গরম ও অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করে। প্রয়োজনীয় অল্প কিছু আসবাব দিয়ে ছিমছাম ভাবে ঘর সাজান যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসা যাওয়া করতে পারে।
৮)  বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করূন

ইলেকট্রনিক অ্যাপ্লায়েন্স বা যন্ত্রপাতিগুলা কাজ করার সাথে সাথে তাপ উৎপন্ন করে। অন্যান্য যন্ত্রপাতি সবসময় ব্যবহার করা না হলেও লাইট যেহেতু সবসময়ই  জ্বালানো থাকে, ফ্লুরোসেন্ট বা অন্যান্য বাল্বের পরিবর্তে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করুন। এলইডি বাল্ব একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, অন্য দিকে খুব কম তাপ উৎপন্ন করে। সাধারণ বাল্ব ইনফ্রারেড রেডিয়েশনের মাধ্যমে আলো উৎপন্ন করে যেখানে ৫% আলো উৎপন্ন হলে ৯৫% তাপ উৎপন্ন হয়। কিন্তু এলইডি বাল্ব থেকে নির্গত আলোর মাত্র ৫% আলো তাপে রূপান্তরিত হয়।


৯) খোলা জানালার সামনে ভেজা চাদর মেলে দিন
ঘরের তাপমাত্রা সহজে কমাতে জানালা খুলে জানালার সামনে একটি ভেজা চাদর মেলে দিন। জানালা দিয়ে যে বাতাস আসবে সেটি ভেজা চাদর থেকে পানি শোষণ করে ঘরে শীতলতা ছড়াবে।
১০) ক্রস ভেন্টিলেশন: টেবিল ফ্যান জানালার দিকে ঘুরিয়ে রাখুন

রুমের গরম বাতাস বের করে দিতে স্ট্যান্ড ফ্যান/টেবিল ফ্যানটি জানালার দিকে ঘুরিয়ে ছেড়ে দিন। এতে ফ্যানের বাতাসের চাপে রুমের গরম বাতাস জানালা দিয়ে বের হয়ে যাবে। প্রয়োজনে একাধিক স্ট্যান্ড/টেবিল ফ্যান‌ ব্যবহার করূন যাতে ঘরের মধ্যে বেশি বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।


১১) রাতে সব জানালা খোলা রাখুন
রাতের বাতাস সবসময়ই দিনের তুলনায় ঠান্ডা। সূর্যের তাপ কমে গেলে বিকালের দিকে জানালা-দরজা খুলে দিন যাতে পুরো বাসায় বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।

 পরিশেষে বলা যায়, এসি, এয়ার কুলার বা অন্যান্য কৃত্রিম উপায়ে ঘর ঠান্ডা রাখা একদিকে যেমন ব্যয়বহুল অন্য দিকে এটি পরিবেশের সাথেসাথে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ও ক্ষতিকর। সর্দি-কাশি, অ্যালার্জিসহ আরো অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয় এসি বা এয়ার কুলার নিয়মিত ব্যবহার করে ঘর ঠান্ডা রাখলে। সবদিক বিবেচনা করে বলা যায়, এই গরমে  প্রাকৃতিক ভাবে ঘর ঠান্ডা করার উপকারিতা অনেক। প্রাকৃতিক উপায়গুলো দীর্ঘক্ষণ ঘর খুব বেশী ঠান্ডা না রাখতে পারলেও  এগুলো আপনাকে সাময়িকভাবে স্বস্তি দিতে সক্ষম।

img

এই গরমে কী খাবেন চা না কফি?

প্রকাশিত :  ০৬:৩২, ০২ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৩৫, ০২ মে ২০২৪

তীব্র গরমে দেশজুড়ে অতিষ্ঠ মানুষ। গরমে কীভাবে শীতল থাকা যায় তা নিয়ে চলছে চর্চা। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার ওপর নজর কম-বেশি সবারই। গরমে চা না কফি পান করা ভালো তা নিয়েও চলছে বিতর্ক। এই গরমে এই দুই পানীয়ের মধ্যে কোনটা বেশি উপকারী? আর দিনে কত কাপ কাপ চা বা কফি খাওয়া উচিত? 

গরমে চা সেরা​


আমাদের অতি পরিচিত চা হল একটি রিফ্রেশিং ড্রিংক। তাই চা খেলে কমে দুশ্চিন্তা, কাজে বশে মন। তবে শুধু মনের হাল ফেরানোই নয়, সেই সঙ্গে ডায়াবিটিস, প্রেশারকে বশে রাখাসহ একাধিক জরুরি কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চা। আর সেই কারণেই তো সারা বিশ্বের প্রথমসারির সব পুষ্টিবিদেরা চায়ের এত গুণগান করেন। তাই আর মনে প্রশ্ন না রেখে নিয়মিত চা খাওয়া চালু করে দিন।

কফিও উপকারী

​কফির মূল উপাদান হল ক্যাফিন। আর এই উপাদান কিন্তু মনের হাল ফেরানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। শুধু তাই নয়, এই উপাদানের গুণে হার্টও থাকে সুস্থ-সবল। সেই সঙ্গে মেলে ইনস্ট্যান্ট এনার্জি। আর এই কারণেই নিয়মিত কফির কাপে চুমুক দিয়ে দিন কাটান গোটা বিশ্বের অগণিত মানুষ। তাই শরীরে কোনও ক্রনিক অসুখ না থাকলে নিয়মিত কফি খেতেই পারেন। তাতে খুব একটা সমস্যা হবে না বললেই চলে।

কফি না চা, গরমে কোনটায় দেবেন চুমুক?​

এই গরমে কফির বদলে চা খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কফিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্লাড প্রেশার বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। আর এই গরমে প্রেশার বাড়লে যে আদতে শরীরেরই বারোটা বাজবে, এই বিষয়টা আলাদা করে বলতে হবে না নিশ্চয়ই। তাই দাবদাহের মধ্যে সুস্থ থাকতে চাইলে চায়ের উপরই রাখুন ভরসা।


​কত কাপ চলতে পারে?​

এই গরমে সারাদিনে ৩ থেকে থেকে ৪ কাপ লিকার চা চলতে পারে। আর যারা দুধ চা খেতে পছন্দ করেন, তারা দিনে ১ থেকে ২ কাপ লো ফ্যাট মিল্কে তৈরি চায়ে চুমুক দিন। এই নিয়মটা মেনে চললে কিন্তু সমস্যার ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা কমবে। তবে সকলে আবার কফির বদলে চা খেয়ে দিন কাটাতে পারবেন না। তাই আপনারা দিনে ১ কাপ ব্ল্যাক কফি খান। এই কাজটা করলে কিন্তু সুস্থ থাকবেন।

প্রচুর পানি পান করুন

এমন দাবদাহ পরিস্থিতিতে দিনে অন্ততপক্ষে ৪ লিটার পানি পান করতেই হবে। পারলে পানির পাশাপাশি ওআরএস এবং ডাবের পানি খান। সেই সঙ্গে পাতে থাকুক হালকা খাবার এবং মৌসুমি ফল। এড়িয়ে চলুন ফাস্টফুড।